Thursday, July 4, 2013

ঋতুবিতান -- রাকা



মুখের যে পাশটায় রোদ পড়ে, সেখানটা চিরসবুজের দেশ। উল্টো দিকটা, স্বভাবতই তুন্দ্রা অঞ্চল।

আজকাল গ্রিল বেয়ে প্রায়ই কিছু না-শীত, না-বসন্ত আশ্চর্য ছায়া নেমে আসে। যারা তাদের চেনে না, তারা ভাবে উল্টোদিকের মাধবীলতা গাছটুকুর ছায়া হয়তো বা। কিন্তু রোদচশমা দিয়ে দেখলে বোঝা যায়, ওরা এক অচেনা প্রজাতি। তাদের হাতে, চুলে, কোমরবন্ধনীতে অন্ধকার সব আকর্ষ, আর কোষের ভেতরে হাজার হাজার বছরের ঘুম। 


তোমারও আছে আয়নাজোড়া আঁখি
নিজেকে বেঁধা লক্ষ সূচিমুখে 
নিজে নিজের হত্যাকারী সেজে
দুঠোঁটে নীল এঁকেছ কৌতুকে

দুই ভ্রূর মাঝখান দিয়ে খাড়া উঠে গেলে আগ্নেয় পাহাড়। উজ্জ্বল টিপ সেখানে দিনরাত্রি কমলারঙের শিখায় জ্বলতে থাকে। অথচ সবাই ভাবত, ও বুঝি মৃত আগ্নেয়গিরি। আর সেই সুযোগে সে আগুনে শান দিয়েছে একটু একটু করে ...



তুমিও খুব থেকেছ দোলাচলে
ভেজানো চুল, দু:সাহসী ডানা
লাভা ও ছাই জমছে সানুদেশে
ওড়ার কথা খেলাচ্ছলে জানা

মুখের যে দিকটায় কেউ ভালোবেসে তাকায়নি, সেইখানে রাত আর দিনের ঘণ্টার হিসেব মেলে না। শুধু ছায়াগাছেদের বয়েস বাড়ে। লতায় পাতায় দাগ পড়ে যায়। কেউ কেউ গম্ভীরমুখে বলেন - সময়ের দাগ। ও শোনে , আর মনে মনে হাসে।


সে তো তোমার অস্তমিত ছায়া 
তুমি কি তার সঙ্গী হবে ভাবো? 
ঘন বিকেল, সন্ধে নেমে আসে 
গলানো রাত কিছুটা তাম্রাভ 

মুখটা ঘুরিয়ে নেয় সে। মুখের অন্যপাশটা চিরহরিৎ, অনেকেই বলতো। এমনকি এখান থেকে খসে পড়া একটুকরো ফুলের পাপড়িকে চোখের পলক ভেবে কেউ উড়িয়ে দিয়েছিল কোনও এককালে। সেই থেকেই ওর ইচ্ছামৃত্যু। স্বেচ্ছায় উড়ে যাবে যে কোনো দিন... যে কোনও শীত, যে কোনও বসন্তে...

* এই কবিতা আগে 'Book পকেট'-নামক আন্তর্জাল পত্রিকায় প্রকাশিত...

About Us | Site Map | Privacy Policy | Contact Us | Blog Design | কথা তো বলার জন্যেই